খুলনা-মোংলা রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। উদ্বোধনের সাত মাস পর শনিবার প্রথম দিনের মতো দেশের বৃহত্তর স্থলবন্দর বেনাপোল জংশন থেকে ছেড়ে আসে “বেতনা এক্সপ্রেস”। এটি খুলনার ফুলতলায় এসে নাম বদলে “মোংলা কমিউটার” নামে দেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর মোংলার উদ্দেশ্যে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায়।
শনিবার (১ জুন) সকাল ১০টার দিকে যাত্রী ভর্তি করে মোংলার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ট্রেনটি। ১৩৮ কিলোমিটার রুটে মোট আটটি স্টেশনে দাঁড়াবে। খুলনার ফুলতলা পর্যন্ত এর সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, এরপর ফুলতলা থেকে মোংলা নতুন রেলপথে এ ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার।
ট্রেনে যাত্রী আলতাফ হোসেন দৈনিক নিশান’ কে বলেন, “আমি সকালে ভারত থেকে এসেছি। এখন মোংলার ট্রেনে উঠে কাটাখালী স্টেশনে নামব। এর আগে বাসে যাতায়াত করতাম। এতে খুলনা থেকে বাস পরিবর্তন করতে হতো। কিন্তু ট্রেন চালু হওয়াতে সময় কম লাগবে আর ভাড়াও কম।”
মোংলা বন্দর এলাকার ব্যবসায়ী মিনহাজ শেখ বলেন, “আমি আমদানি-রপ্তানির ব্যবসা করি। ট্রেনে করে মোংলা থেকে বেনাপোলে যাতায়াত করতে পারব। তবে যদি যাত্রীবাহী ট্রেনের পাশাপাশি মালবাহী ট্রেনও চালু করা হয়, তাহলে মালামাল বহনের জন্যও অনেক সুবিধা হবে। আমরা দ্রুত মালবাহী ট্রেন চালুর দাবি জানাচ্ছি।
প্রথম দিনে মোংলা রেলপথে ট্রেন চলাচলের সাক্ষী হতে “বেতনা এক্সপ্রেসে” যাত্রা শুরু করেন কয়েকজন তরুণ। এদের মধ্যে রিয়েল রহমান নামে এক তরুণ বলেন, “আমরা সুন্দরবনে যাওয়ার জন্য আগে বাসে যেতাম। এতে করে সময় বেশি লাগত। এখন আমরা ট্রেনে করে অল্প সময়ে মোংলা গিয়ে সুন্দরবন ঘুরে আসতে পারব। যদিও আজ সুন্দরবন যাচ্ছি না, আজ ইতিহাসে সাক্ষী হতে মোংলার পথে প্রথম ট্রেনে যাত্রা করছি।”
বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার সাজ্জাদুর রহমান ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “বেনাপোল থেকে যাত্রী ভর্তি বেতনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি মোংলার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে। বেনাপোল থেকে ট্রেন ছাড়ার পর নাভারণ, ঝিকরগাছা, যশোর জংশন, রূপদিয়া, সিঙ্গিয়া, চেঙ্গুটিয়া, নওয়াপাড়া, বেজেরডাঙ্গা, ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহাম্মদনগর, কাটাখালি, চুলকাটি বাজার, ভাগা ও দিগরাজ স্টেশনে যাত্রাবিরতি দিয়ে মোংলায় পৌঁছাবে।”
তিনি বলেন, “ট্রেনটি মোংলায় পৌঁছাবে দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে। এরপর মোংলা থেকে ট্রেনটি ছাড়বে দুপুর ১টায় এবং বেনাপোলে পৌঁছাবে বিকেল সাড়ে ৪টায়। মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিন এ রুটে একই সময়ে ট্রেন চলাচল করবে। ট্রেনটিতে মোট আসন সংখ্যা ৭১৬টি। বেনাপোল থেকে প্রায় ৬০০ জন যাত্রী নিয়ে মোংলায় যাচ্ছে ট্রেনটি।